ছবিঃ সংগৃহীত
নিউজ ডেস্কঃ
কাতার বিশ্বকাপের প্রস্তুতিতে গত ১০ বছরে বাংলাদেশি ১০১৮ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।পাশাপাশি বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার ৬ হাজার ৫০০ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এসব দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও শ্রীলংকা। মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দ্য গার্ডিয়ান।
প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, বিশ্বকাপ আয়োজনের গৌরব অর্জনের পর থেকে কাতারে প্রতি সপ্তাহে গড়ে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
গত ১০ বছরে যে কয়জন নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে, তার অধিকাংশকেই স্বাভাবিক মৃত্যু বলে দাবি করেছে ২০২২ ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজক দেশ কাতার। গার্ডিয়ানের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালের যতজন মারা গেছেন, তাদের শতকরা ৬৯ ভাগের স্বাভাবিক মৃত্যু ও ১২ ভাগের মৃত্যু সড়ক দুর্ঘটনায়। শুধু ৭ ভাগের মৃত্যুর সঙ্গে কাজের পরিবেশ জড়িত। আর ৭ ভাগ কর্মী করেছেন আত্মহত্যা।এশিয়ার এই পাঁচ দেশের সরকারি তথ্যের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন করেছে।
বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার সরকারি পরিসংখ্যানের বরাত দিয়ে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে গার্ডিয়ানে। এতে বলা হয়, ওই পাঁচ দেশের কাতারস্থ দূতাবাস ও অন্যান্য সরকারি কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্য মতে জানা গেছে, ২০১০ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ভারতের ২,৭১১ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। একই সময় বাংলাদেশের ১,০১৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন কাতারে। এই দশ বছরে নেপালের ১,৬৪১, পাকিস্তানের ৮২৪ ও শ্রীলংকার ৫৫৭ জনের মৃত্যু হয়েছে কাতারে। উল্লেখ্য, মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে দাবি করা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে। কেনিয়া ও ফিলিপাইনের অভিবাসী শ্রমিকদের পরিসংখ্যান ওই প্রতিবেদনে যুক্ত করা হয়নি।
সংবাদ মাধ্যমটির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই লাশের ময়নাতদন্ত করতে দেওয়া হয় না। ২০১৪ সালে কাতার সরকারের নিজস্ব আইনজীবীরাও প্রবাসী শ্রমিকদের মধ্যে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ায় ময়নাতদন্ত করানোর পরামর্শ দিয়েছিল। কিন্তু সরকার সে পরামর্শকে পাত্তা দেয়নি।
২০১৯ সালে এটা জানা গেছে, কাতারের তীব্র তাপমাত্রা শ্রমিকদের মৃত্যুতে বড় প্রভাব রাখছে। জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংঘটনের গবেষণায় পাওয়া গেছে, বছরের অন্তত চার মাস তীব্র দাবদাহের মধ্যে কাজ করতে হয় শ্রমিকদের।
২০২২ সালের ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে গত এক দশক ধরে নজিরবিহীন নির্মাণকাজ পরিচালনা করছে কাতার। সাতটি নতুন স্টেডিয়ামের পাশাপাশি কয়েক ডজন বড় প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে বা নির্মাণাধীন রয়েছে বলে জানা যায়।
Leave a Reply